Shareholding Pattern (শেয়ারহোল্ডিং প্যাটার্ন) কী?

Shareholding Pattern (শেয়ারহোল্ডিং প্যাটার্ন) হলো একটি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের তালিকা এবং তাদের মালিকানাধীন শেয়ারের পরিমাণের বিবরণ। এটি কোম্পানির শেয়ারবাজারে মালিকানা কিভাবে ভাগ করা হয়েছে তা প্রকাশ করে। শেয়ারহোল্ডিং প্যাটার্ন কোম্পানির শেয়ারের বিভিন্ন শ্রেণীর মালিকদের মধ্যে যে পরিমাণ শেয়ার রয়েছে, তা গণনা করে এবং গ্রুপভিত্তিক ভাগফল প্রদান করে।

এটি সাধারণত তিনটি প্রধান ধরনের শেয়ারহোল্ডারের মধ্যে ভাগ করা হয়:

  1. Promoters (প্রোমোটারস):
    কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বা মালিকরা, যারা কোম্পানির শেয়ারের একটি বড় অংশ ধারণ করেন। সাধারণত প্রোমোটাররা কোম্পানির পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং তাদের শেয়ারের অংশীদারি কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।

  2. Public Shareholders (জনসাধারণ শেয়ারহোল্ডারস):
    সাধারণ জনগণ যারা শেয়ার বাজারের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয় করে কোম্পানির মালিকানা অর্জন করেন। এদের শেয়ার সাধারণত প্রোমোটারদের তুলনায় কম থাকে।

  3. Institutional Investors (প্রতিষ্ঠানগত বিনিয়োগকারীরা):
    এসব শেয়ারহোল্ডাররা বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ফান্ড (যেমন: মিউচুয়াল ফান্ড, পেনশন ফান্ড, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি) যারা একটি কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করে দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য বিনিয়োগ করেন।

Shareholding Pattern থেকে কি বোঝা যায়?

Shareholding Pattern এর বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে:

  1. Promoter’s Control (প্রোমোটারদের নিয়ন্ত্রণ):
    প্রোমোটারদের শেয়ারের পরিমাণ কোম্পানির নিয়ন্ত্রণের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। যদি প্রোমোটারদের শেয়ারের পরিমাণ বেশী থাকে, তবে তারা কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণে বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারে। সাধারণত ২৬% বা তার বেশি শেয়ার ধারণকারী প্রোমোটাররা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারেন।

  2. Public Ownership (জনসাধারণের মালিকানা):
    শেয়ারহোল্ডিং প্যাটার্ন দেখে জানা যায় জনসাধারণের হাতে কতটা শেয়ার রয়েছে। এর মানে হলো কোম্পানির শেয়ার বাজারে কী পরিমাণ লিকুইডিটি রয়েছে এবং কোম্পানির শেয়ার মূল্য কতটা স্থিতিশীল বা তরল হতে পারে।

  3. Institutional Investor Confidence (প্রতিষ্ঠানগত বিনিয়োগকারীদের আস্থা):
    যদি কোন কোম্পানির মধ্যে বড় প্রতিষ্ঠানগত বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ অনেক থাকে, তবে এটি সেই কোম্পানির বাজারে আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধি পেতে পারে এমন প্রতিক্রিয়া দিতে পারে। এটি সাধারণত প্রমাণ করে যে প্রতিষ্ঠানগুলি কোম্পানির ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখে বিনিয়োগ করছে।

  4. Minority Shareholders (মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডারস):
    জনসাধারণ এবং অন্যান্য ছোট শেয়ারহোল্ডারদের অংশগ্রহণের পরিমাণ কত তা দেখতে পাওয়া যায়। মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সাধারণত প্রভাব বিস্তার করতে পারে না, তবে তারা কোম্পানির ভবিষ্যত কর্মপন্থার উপর প্রভাবিত হতে পারে।

  5. Changes Over Time (সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন):
    শেয়ারহোল্ডিং প্যাটার্ন থেকে এটি জানা যায় যে, কোম্পানি কি শেয়ারের মালিকানা বাড়াতে বা কমাতে চেষ্টা করছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি প্রোমোটারদের শেয়ার পরিমাণ হ্রাস পায় এবং জনসাধারণের শেয়ার বাড়ে, তা হলে এটি একটি সংকেত হতে পারে যে কোম্পানি জনসাধারণের জন্য আরো লভ্য হতে চাচ্ছে।

Shareholding Pattern এ কী কী থাকে?

শেয়ারহোল্ডিং প্যাটার্ন সাধারণত নিম্নলিখিত তথ্যগুলো অন্তর্ভুক্ত করে:

  1. Promoter and Promoter Group’s Holding (প্রোমোটার এবং প্রোমোটার গ্রুপের মালিকানা):
    এটি দেখায় কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতাদের বা মালিকদের শেয়ারের পরিমাণ এবং তাদের মধ্যে শেয়ারের ভাগফল।

  2. Public Shareholding (জনসাধারণের মালিকানা):
    জনসাধারণের মধ্যে শেয়ারের ভাগফল, যা শেয়ার বাজারের মাধ্যমে ক্রয় করে থাকে। এই অংশে পৃথক শেয়ারহোল্ডারদের সংখ্যা এবং তাদের শেয়ারের পরিমাণের বিস্তারিত থাকে।

  3. Non-Institutional Investors (অসামাজিক বিনিয়োগকারীরা):
    ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীরা, যারা কোম্পানির শেয়ারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ধারণ করে, তাদের শেয়ারের পরিমাণ।

  4. Institutional Holding (প্রতিষ্ঠানগত মালিকানা):
    মিউচুয়াল ফান্ড, পেনশন ফান্ড, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের পরিমাণ।

  5. Government Holding (সরকারি মালিকানা):
    সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলি যদি কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণ করে, তাহলে তা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়।

  6. Pledged Shares (প্লেজড শেয়ার):
    যদি কোনো শেয়ারহোল্ডার তার শেয়ার ঋণ হিসেবে বন্ধক রাখে, তবে সেই শেয়ারগুলোকে "প্লেজড শেয়ার" বলা হয়। এটি কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য বা শেয়ারহোল্ডারদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে একটি সংকেত হতে পারে।

Shareholding Pattern একটি কোম্পানির মালিকানা কিভাবে বিতরণ করা হয়েছে এবং কোন গ্রুপ কতটা শেয়ার ধারণ করে তার একটি বিশদ প্রতিবেদন। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম, কারণ এর মাধ্যমে তারা কোম্পানির শেয়ারের বাজার স্থিতিশীলতা, নিয়ন্ত্রণ এবং ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।

Video material: 


এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

স্ট্র্যাডল এবং স্ট্র্যাংল: কী এবং কীভাবে করতে হয়?

SIP করার সময় ঝুঁকি এড়ানোর উপায়

বেয়ারিশ ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন: বিশদ বিবরণ ও ব্যবহার