Fiscal Policy or Budget অর্থনীতির এবং শেয়ার বাজারে উপর প্রভাব
Fiscal Policy হল সরকার কর্তৃক আর্থিক নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া যা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং মূল্যস্তর নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত সরকারের ব্যয় এবং রাজস্ব (taxation) সম্পর্কিত সিদ্ধান্তসমূহের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। সরকার তার আয় এবং ব্যয়ের মাধ্যমে অর্থনীতির চাহিদা এবং সরবরাহের দিকে প্রভাব ফেলে, যা দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
Fiscal policy দুটি প্রধান উপাদানে বিভক্ত:
- Expansionary Fiscal Policy (বর্ধিত আর্থিক নীতি)
- Contractionary Fiscal Policy (সংকুচিত আর্থিক নীতি)
Fiscal Policy অর্থনীতির উপর প্রভাব:
Aggregate Demand বৃদ্ধি বা হ্রাস:
- Expansionary fiscal policy (বর্ধিত আর্থিক নীতি) যখন সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি পায় অথবা ট্যাক্স কমানো হয়, তখন এর ফলে aggregate demand বা মোট চাহিদা বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, সরকারি প্রকল্পের জন্য ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কর্মসংস্থান তৈরি হয় এবং মানুষের আয় বাড়ে, যা তাদের খরচ বাড়াতে সহায়তা করে, ফলে উৎপাদন এবং মুনাফা বৃদ্ধি পায়।
- অন্যদিকে, Contractionary fiscal policy (সংকুচিত আর্থিক নীতি) কার্যকর হলে, সরকারের ব্যয় কমানো হয় অথবা ট্যাক্স বাড়ানো হয়, যার ফলে aggregate demand কমে যায় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হতে পারে। এই নীতি সংকটকালীন সময় যেমন মুদ্রাস্ফীতির সময় বা বাজেটের ঘাটতি কমাতে ব্যবহৃত হয়।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ:
- Expansionary fiscal policy অর্থনীতিতে অতিরিক্ত নগদ প্রবাহ সৃষ্টি করে, যা মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় এবং কর হ্রাস করার ফলে জনসাধারণের হাতে টাকা বেড়ে যায়, কিন্তু যদি চাহিদা অতিরিক্ত বেড়ে যায় এবং সরবরাহ একযোগে না বাড়ে, তাহলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, যা মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করতে পারে।
- অন্যদিকে, Contractionary fiscal policy অর্থনীতিতে নগদ প্রবাহ কমায়, ফলে মূল্যস্তরের নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যায়। এটি মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু একে পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে যেতে পারে।
কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব:
- Expansionary fiscal policy কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সহায়তা করে। যখন সরকার বড় বড় অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করে বা ট্যাক্স কমিয়ে দেয়, তখন বাজারে শ্রমের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, যা বেকারত্বের হার কমাতে সাহায্য করে।
- বিপরীতভাবে, Contractionary fiscal policy যখন পরিচালিত হয়, তখন সরকারি ব্যয় কমানোর কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগও কমে যেতে পারে, যা বেকারত্বের হার বাড়াতে পারে।
Fiscal Policy এর শেয়ার বাজারে প্রভাব:
শেয়ার বাজারের ওপর fiscal policy এর প্রভাব অনেক গভীর। অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা শেয়ার বাজারের কর্মক্ষমতা এবং বিনিয়োগকারীদের মনোভাবের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। সরকারের বাজেট এবং আর্থিক সিদ্ধান্তগুলি সরাসরি শেয়ার বাজারের দিকনির্দেশনা দিতে পারে।
Expansionary Fiscal Policy এবং শেয়ার বাজার:
- যখন সরকার expansionary fiscal policy গ্রহণ করে (যেমন কর কমানো, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা), তখন এটি শেয়ার বাজারের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি সাধারণত corporate earnings বা কোম্পানির লাভ বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়, কারণ সরকার ব্যয় বৃদ্ধি করে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, যা কোম্পানির মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- এই ধরনের নীতি শেয়ার বাজারের মধ্যে উচ্চতর বিশ্বাস তৈরি করতে পারে এবং বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হতে পারে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ফলে খরচ বৃদ্ধি পায়, যা পণ্য এবং সেবা বিক্রি করার জন্য কোম্পানিগুলোর উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
Contractionary Fiscal Policy এবং শেয়ার বাজার:
- বিপরীতভাবে, contractionary fiscal policy (যেমন সরকারি ব্যয় কমানো বা কর বৃদ্ধি) শেয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যখন সরকার খরচ কমায় বা কর বাড়ায়, তখন এটি ভোক্তা খরচ এবং কোম্পানির লাভের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে, যা শেয়ার বাজারের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।
- এই ধরনের নীতি বাজারে অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে, যা শেয়ার মূল্য কমানোর দিকে পরিচালিত করে।
শেয়ার বাজারের আত্মবিশ্বাস এবং মানসিকতা:
- Fiscal policy সরকারের নির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে বাজারের মানসিকতা এবং আত্মবিশ্বাসকে প্রভাবিত করতে পারে। সরকার যদি একটি শক্তিশালী এবং কার্যকরী বাজেট নীতি গ্রহণ করে, তবে এটি বাজারে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে। আর যদি বাজেটের ঘাটতি বেড়ে যায় বা পলিসি অস্থির হয়ে যায়, তবে এটি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
Fiscal Policy এর কার্যকারিতা:
অর্থনৈতিক সংকটের সময়:
- একদিকে, যখন অর্থনীতি মন্দার মধ্যে থাকে বা সংকটকালীন সময়ে থাকে, তখন expansionary fiscal policy অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। যেমন, ২০০৮ সালের global financial crisis এর সময়ে বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন রকমের স্থায়ী ব্যয়ের নীতি গ্রহণ করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সময়:
- অন্যদিকে, contractionary fiscal policy এমন সময় ব্যবহার করা হয় যখন অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায়। এ সময় সরকার ব্যয় কমিয়ে অথবা কর বাড়িয়ে চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করতে পারে, যা শেয়ার বাজারে অস্থিরতার সুযোগ দিতে পারে।
Fiscal policy দেশের অর্থনীতি এবং শেয়ার বাজারের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার যখন তার ব্যয় এবং রাজস্ব নীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে, তখন তা সাধারণত শেয়ার বাজারে প্রতিফলিত হয়। Expansionary fiscal policy শেয়ার বাজারের জন্য সাধারণত ইতিবাচক, কারণ এটি কোম্পানির লাভ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে সহায়তা করে। অন্যদিকে, contractionary fiscal policy শেয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এটি বাজারের চাহিদা এবং কোম্পানির লাভ হ্রাস করতে পারে। শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরা সরকারের আর্থিক পদক্ষেপের প্রতি খুবই মনোযোগী থাকে, কারণ এই পদক্ষেপগুলি তাদের বিনিয়োগের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।