Balance Sheet পড়ার পদক্ষেপ

 Balance Sheet একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক বিবরণী যা একটি কোম্পানির নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার সম্পদ, দায় এবং শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটি প্রদর্শন করে। এটি কোম্পানির আর্থিক স্হিতি বা আর্থিক স্বাস্থ্য বুঝতে সাহায্য করে। সাধারণত, এটি একটি নির্দিষ্ট তারিখে তৈরি করা হয় এবং "Assets = Liabilities + Equity" এই সমীকরণ অনুসারে তৈরি হয়।

Balance Sheet এর উপাদান:

Balance Sheet সাধারণত তিনটি প্রধান বিভাগে বিভক্ত থাকে:

1. Assets (সম্পদ)
2. Liabilities (দায়)
3. Equity (ইকুইটি)

এই তিনটি বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক হলো:

$$\text{Assets}=\text{Liabilities}+\text{Equity}$$

1. Assets (সম্পদ)

সম্পদ হলো কোম্পানির মালিকানাধীন সেসব জিনিস যা ভবিষ্যতে অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম। সম্পদ দুই ধরনের হয়:

Current Assets (বর্তমান সম্পদ):

এগুলি হলো সেই সম্পদ যা কোম্পানি এক বছরের মধ্যে নগদে পরিণত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:

• Cash and Cash Equivalents (নগদ এবং নগদ সদৃশ সম্পদ): কোম্পানির হাতে থাকা নগদ অর্থ এবং স্বল্প-মেয়াদি বিনিয়োগ যা সহজে নগদে রূপান্তরিত করা যায়।
• Accounts Receivable (ডেবটর): গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওনা অর্থ।
• Inventory (স্টক/গুদামে পণ্য): উৎপাদন বা বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা পণ্য।
• Prepaid Expenses (প্রিপেইড খরচ): আগাম পরিশোধ করা খরচ, যেমন ভাড়া, বীমা, ইত্যাদি।

Non-Current Assets (অস্থায়ী সম্পদ):

এগুলি হলো দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ যা এক বছরের মধ্যে নগদে রূপান্তরিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ:

• Property, Plant, and Equipment (PPE): জমি, ভবন, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ইত্যাদি।
• Intangible Assets (অবিষয়ী সম্পদ): পেটেন্ট, ট্রেডমার্ক, ব্র্যান্ড ভ্যালু ইত্যাদি।
• Investments (বিনিয়োগ): অন্যান্য কোম্পানির শেয়ার বা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ।

বিশ্লেষণ:

• যত বেশি Current Assets থাকবে, কোম্পানির তরলতা বেশি হবে, যা তার দৈনন্দিন কার্যক্রমের জন্য সহায়ক।
• Non-Current Assets দীর্ঘমেয়াদী স্থিতি বা পরিসরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

2. Liabilities (দায়)

Liabilities বা দায় হলো কোম্পানির সে সকল অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা যা ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এটি দুটি ভাগে বিভক্ত:

Current Liabilities (বর্তমান দায়):

এগুলি হলো সেই দায়, যা কোম্পানি এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে বাধ্য। উদাহরণস্বরূপ:

• Accounts Payable (ক্রেডিটর): সরবরাহকারী বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের কাছে পরিশোধযোগ্য অর্থ।
• Short-term Debt (স্বল্পমেয়াদি ঋণ): এক বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য ঋণ।
• Accrued Expenses (সঞ্চিত খরচ): পরিশোধ না করা খরচ যেমন বেতন, ট্যাক্স ইত্যাদি।
• Other Payables (অন্যান্য দায়): অন্যান্য চলতি দায় যেমন প্রিপেইড ইনকাম, ট্যাক্স দাবী ইত্যাদি।

Non-Current Liabilities (অস্থায়ী দায়):

এগুলি হলো দীর্ঘমেয়াদী দায়, যা এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ:

• Long-term Debt (দীর্ঘমেয়াদি ঋণ): এক বছরের বেশি সময়ের জন্য নেওয়া ঋণ।
• Deferred Tax Liabilities (স্থগিত কর দায়): ভবিষ্যতে পরিশোধযোগ্য করের পরিমাণ।
• Pension Liabilities (পেনশন দায়): কর্মচারীদের পেনশন পরিশোধের দায়।

বিশ্লেষণ:

• Current Liabilities কম থাকলে, কোম্পানি তার দৈনন্দিন খরচ এবং দায় সহজে পরিশোধ করতে পারবে।
• Non-Current Liabilities কোম্পানির ভবিষ্যৎ আর্থিক দায়ের প্রতিফলন, এটি কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি স্থিতি বুঝায়।

3. Equity (ইকুইটি)

Equity হলো শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানা বা কোম্পানির মূলধন, যা শেয়ারহোল্ডাররা তাদের বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জন করে। এটি কোম্পানির সঞ্চিত লাভ এবং ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত।

Common Equity (সাধারণ শেয়ারধারী ইকুইটি):

• Share Capital (শেয়ার মূলধন): কোম্পানির শেয়ার ইস্যু করার মাধ্যমে যে মূলধন সংগৃহীত হয়।
• Retained Earnings (রিটেইনড আর্নিংস): আগের বছরে অর্জিত এবং পুনরায় বিনিয়োগ করা লাভ।
• Other Reserves (অন্যান্য রিজার্ভ): কোম্পানির ভবিষ্যৎ ব্যবহারের জন্য সংগৃহীত অতিরিক্ত পরিমাণ।

বিশ্লেষণ:

• ইকুইটি কম থাকলে, কোম্পানি তার কার্যক্রম চালাতে আরও ঋণের উপর নির্ভরশীল হতে পারে, যা আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
• উচ্চ ইকুইটি মানে কোম্পানির মালিকানা বেশি শেয়ারহোল্ডারদের কাছে রয়েছে এবং এটি কোম্পানির আর্থিক সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতার প্রতীক হতে পারে।

Balance Sheet এর প্রধান সুত্র:

1. Assets = Liabilities + Equity
   এটি একটি মৌলিক সূত্র যা সমস্ত ব্যালেন্স শিটের ভিত্তি। এর মাধ্যমে কোম্পানির সম্পদ, দায় এবং মালিকানার সম্পর্ক স্পষ্ট হয়।

2. Current Ratio:

   $$\text{Current Ratio }= \frac{\text{Current Assets }}{\text{Current Liabilities}}$$

   এটি কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তার তরলতা বা নগদ প্রবাহের সক্ষমতা পরিমাপ করে।

3. Debt to Equity Ratio:

   $$\text{Debt to Equity Ratio }= \frac{\text{Total Liabilities }}{\text{Shareholder’s Equity}}$$

   এটি কোম্পানির ঋণ এবং ইকুইটির অনুপাত দেখায়, যা কোম্পানির আর্থিক ঝুঁকি নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।

Balance Sheet থেকে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?

1. অধিক সম্পদ এবং দায়ের পরিমাণ বিশ্লেষণ করুন:
   কোম্পানির সম্পদ যদি ঋণ বা দায়ের তুলনায় বেশি হয়, তবে এটি একটি সুদৃঢ় আর্থিক অবস্থার ইঙ্গিত দেয়।

2. তরলতা বিশ্লেষণ:
   Current Ratio এবং Quick Ratio দেখতে হবে। যদি এগুলি কম থাকে, তবে কোম্পানির দৈনন্দিন কার্যক্রম চালানোর জন্য পর্যাপ্ত নগদ বা তরল সম্পদ নেই।

3. ঋণ ও ইকুইটির তুলনা করুন:
   ঋণের পরিমাণ কোম্পানির ইকুইটির তুলনায় অনেক বেশি হলে, এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। Debt to Equity Ratio দেখে কোম্পানির ঋণের পরিস্থিতি যাচাই করতে পারেন।

4. Retained Earnings বা সঞ্চিত লাভ:
   যদি সঞ্চিত লাভ বা Retained Earnings উচ্চ হয়, তবে কোম্পানি তার লাভ পুনরায় ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে সক্ষম, যা তার ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।

Balance Sheet পড়া কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি কোম্পানির সামগ্রিক সাস্থ, তরলতা, এবং ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে ধারণা দেয়। Assets, Liabilities, এবং Equity বিশ্লেষণ করে কোম্পানির স্ট্রং বা উইক পয়েন্টগুলো বের করা যায়, যা বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।

Video material: